Wednesday, October 16, 2024

একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে নির্বাক মা, বুক চাপড়ে কাঁদছেন বোনরা


 ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা ফাতেমা বেগম।

আরও পড়ুন

শিশু ধর্ষণের অভিযোগে কিশোর আটক

তাঁতী লীগ নেতাকে কান ধরিয়ে ওঠবস, ভিডিও ভাইরাল

‘দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিন’

এবার প্রকাশ হলো সাবেক এমপি মোস্তাফিজের দুর্নীতির থলের বিড়াল

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করলেন আ. লীগ নেতা

ফাতেমা বেগম, বয়স ৫২ বছর। একমাত্র কর্মঠ ছেলের মৃত্যুতে তিনি নির্বাক। যে যায়, শুধু তার দিকেই তাকিয়ে থাকেন তিনি। চোখে যেন পানি নেই। পাশেই তার দুই মেয়ে মুন্নি বেগম ও শিউলি বেগম ভাইয়ের জন্যে বুক চাপড়ে শুধুই কাঁদছেন। বুধবার সকালে সরেজমিন এই করুন দৃশ্য দেখা যায় লক্ষ্মীপুরে বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত আরিফ হোসেন হৃদয়ের (১৯) বাড়িতে গিয়ে।

Advertisement

হৃদয়ের বাড়ি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার রাজীবপুর এলাকায়। তার মা ফাতেমা নির্বাক হয়ে বসে ছিলেন ঘরের সামনে। একপর্যায়ে যেন জ্ঞান ফিরে পেলেন তিনি। চোখের পানি তার গাল বেয়ে ঝরতে থাকে। স্বজনেরা এ সময় তাকে নানা কথা বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর ছেলের বিষয়ে নানা প্রসঙ্গ তুলে কান্না করতে থাকেন।

রোববার রাত দুইটার দিকে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে গ্রিন লাইফ ফিলিং স্টেশনে গ্যাস রিফিলের সময় একটি বাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে ৩ জন নিহত হন, আহত হন আরও ২০ জন।

নিহত অপর দুজন মো. সুমন ও ইউসুফ হোসেন নামের দুই ব্যাটারী চালিত অটোরিকশাচালক। এ ঘটনায় ইউসুফ হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় মামলা করেছেন। এতে বাসমালিক সাইফুল ইসলামসহ দুই জনকে আসামি করা হয়।

ছাত্র আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করেছে জামায়াত-শিবির: সজীব ওয়াজেদ জয়

 

কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে সরকার পতন পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলনকে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

বুধবার রাতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা অনলাইনে দেখেছি কীভাবে ছাত্রদের আন্দোলনকে জামাত-শিবির নিয়ন্ত্রণ করেছে, এমনকি তারা নিজেরাও স্বীকার করেছে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলতে তাদের কর্মকাণ্ডও আপনারা দেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, এখন তারা প্রকাশ্যে আামদের মুক্তির সংগ্রামে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে অস্বীকার করছে। নিজেদেরকে রাজাকার হিসেবে নিজেরাই আবার জাতির সামনে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।

শমসের মবিন চৌধুরীকে বিদেশে যেতে দেওয়া হয়নি

 

শমসের মবিন চৌধুরীকে বিদেশ যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শমসের মবিনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শমসের মবিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা।

শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি বিএনপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০১৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দেন তিনি। সবশেষ গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন হন তিনি। তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নাজমুল হুদা। গত জাতীয় নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

আজ রাতে মুঠোফোনে শমসের মবিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাঁদের দুপুরে থাই এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা ছিল। থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে তাঁর স্ত্রী ডাক্তারের কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্টও নিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় রেখেও তাঁদের বিদেশে যেতে দেওয়া হয়নি।

মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কারণে বিমানবন্দরে গিয়ে ভিআইপি টার্মিনালে বসেছিলেন জানিয়ে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, সেখানে বসার পর তাঁদের দুজনকে পাসপোর্টের ফটোকপি দিতে বলা হয়। ফটোকপি দেওয়ার পর আর কারও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ইমিগ্রেশন অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ছাড়পত্র পাওয়া গেলেও আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া যায়নি। এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টাকে কল করলে তিনি এই বিষয় দেখেন না জানিয়ে বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিদেশ যেতে কোনো বাধা নেই বলে জানান। এরপর ইমিগ্রেশন অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান।

পরে একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক পরিচালককে কল করেছেন জানিয়ে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি যখন বলেছি আমার স্ত্রী একা যেতে পারলেও সমস্যা নেই। প্রয়োজনে আমি দু–তিন দিন পরে যাব। এরপর গোয়েন্দা সংস্থার ওই পরিচালক জানান, আপনার স্ত্রী যেতে পারেন কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এরই মধ্যে বিমান চলে গেছে। আমার স্ত্রীও যেতে পারেননি।’

বিদেশ যেতে যাতে বাধা না দেওয়া হয়, এ জন্য ২০১০ সালে আদালত থেকে একটি আদেশ আছে জানিয়ে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, এরপরও তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছে। এটি আদালত অবমাননা। আদালতের আদেশের কপি তিনি স্বরাষ্ট উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে পরিষ্কার উত্তর না পেলে তিনি আদালত অবমাননার মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন।

নতুন চাঁদাবাজের কাছে পুরোনো চাঁদাবাজের চিঠি

 


হ্যালো জুনিয়র,

হোয়াটসআপ! সিনিয়রের পক্ষ থেকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা নিয়ো। আশা করি, তোমাদের আয়রোজগার ভালোই হচ্ছে। এত দিন ধরে আমাদের তিল তিল করে গড়ে তোলা চাঁদাবাজিশিল্পের সুফল তোমরাও ভোগ করছ দেখে বুকটা ভরে যাচ্ছে। সারা দেশে চাঁদাবাজি আর সিন্ডিকেটের জাল বিছিয়ে আমরা যে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম আমরা না থাকলে কেই–বা হাল ধরবে। কিন্তু না। তোমরা আশাহত করোনি। ‘বিকল্প’ হয়ে ঠিকই দাঁড়িয়ে গেছ।

তোমাদের কীর্তি দেখে প্রায়ই আমার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার মতো বলতে ইচ্ছে করে—

‘নবীন কিশোর,

তোমায় দিলাম মহাখালীর ধোঁয়াচ্ছন্ন বাস টার্মিনাল

তোমাকে দিলাম কারওয়ান বাজারের আধিপত্য

আর পকেটভরা হাসি।’

যাহোক, আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে তোমার মতো নতুন দিনের সৈনিকদের কিছু পরামর্শ দিচ্ছি। টুকে নিতে পারো।

দীর্ঘদিন এই শিল্পে তোমাদের পদচারণ না থাকায় চাঁদা তুলতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। মনে রাখবে, চাঁদাবাজির ক্ষেত্রে চাপার জোরই সব। যে যত জোরে গালি দিতে পারবে, সে তত দ্রুত চাঁদা হাতে পাবে। গালি প্র্যাকটিসের জন্য মাঝেমধ্যে ‘ইতিহাস’ সৃষ্টি করা নায়কের সিনেমা দেখার অনুরোধ রইল।

ক্যাশলেস বাংলাদেশের ভিশন সামনে রেখে চাঁদাবাজি করতে হবে। নগদ টাকার উত্তোলনের পাশাপাশি নিজের নামে একটা কিউআর কোড তৈরি করে নিতে পারো, যেন মানুষ সহজেই তোমার কোডটি স্ক্যান করে চাঁদা দিতে পারে। এ ছাড়া দ্রুত চাঁদা প্রদানে মানুষকে উৎসাহিত করতে ক্যাশব্যাক অফার চালু করতে পারো। চাইলে ‘বর্ষসেরা চাঁদা প্রদানকারী’ পুরস্কারও প্রবর্তন করা যেতে পারে।

কার্টুন: মুগ্ধ
কার্টুন: মুগ্ধ

চাঁদাবাজি করার সময় অনেকেই মায়াকান্না জুড়ে দিয়ে নিজেকে গরিব দাবি করতে পারে, চাঁদাদানে অক্ষম প্রমাণ করার চেষ্টা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে শুধু একটা কথাই মনে রাখবে—চাঁদা তোমার মৌলিক অধিকার। এই পৃথিবীতে তুমি ছাড়া বাকি সবাই ধনী। কোনো রকম ইমোশনাল অ্যাটাকের শিকার হওয়া চলবে না। সুযোগ পেলেই শার্টের কলার চেপে ধরবে। শার্টের কলার মূলত একটা তারবিহীন সুইচ। ওখানে চেপে ধরলে এটিএম মেশিনের মতো পকেটের টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বের হয়ে আসে।

চাঁদাবাজিতেও সর্বদা নিজের প্রোফেশনালিজম বজায় রাখবে। কোনো অবস্থাতেই নিজের ক্যারেক্টার থেকে বের হওয়া যাবে না। চাঁদাবাজি করার সময় গার্লফ্রেন্ডের সামনে পড়লেও ক্যারেক্টার পরিবর্তন করা যাবে না। বরং সুযোগ পেলে তার কাছ থেকেও কিছু চাঁদা আদায় করে নিতে হবে। মনে রাখবে, একবার প্রোফেশনালিজম থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্যারেক্টার থেকে বের হয়ে ভালো মানুষ সাজলে পরদিন আর মানুষ তোমাকে মূল্য দেবে না, চাঁদা তো দূরের কথা।

আমাদের ছেলেরা হেলমেট পরে চাঁদাবাজি করত। এতে সহজেই লোকজন দূর থেকেও তাদের চিনতে পারত এবং চাঁদার টাকা প্রস্তুত রাখত। আশা করি, তোমরাও নিজেদের ব্র্যান্ডিংয়ে মনোযোগ দেবে। আমাদের মতো তোমরাও এ রকম কোনো বেশ ধরবে, যেন দূর থেকেও মানুষ তোমাদের চিনতে পারে।

মাঝেমধ্যে চাঁদা তুলতে গেলে লোকজন তোমাকে ‘১৫ বছর কোথায় ছিলে?’ বলে তাচ্ছিল্য করতে পারে। এসবে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। মনে রেখো, এখন যেমন আমি দৌড়ের ওপর আছি, তেমনি একদিন তোমাকেও দৌড়ের ওপর থাকতে হবে। এ জন্যই আমার এক বড় ভাই পইপই করে বলেছিলেন, ‘লাইফ ইজ আ রেস।’ মানুষমাত্রই দৌড়বিদ।

পরিশেষে বলতে চাই, প্রকৃতি শূন্যস্থান পছন্দ করে না। তাই এখন আমাদের জায়গায় তোমরা পুরোদমে কাজ করছ। পকেট পূর্ণ করার এখনই সময়। পকেটের ‘পূর্ণতা’ নিয়েই তো আর্টসেল গেয়েছে, ‘আর নয় সময় উদ্দেশ্যহীন মিছিলে/ তুমি সেই পূর্ণতা আমার অনুভবে।’

সরকার যাবে, সরকার আসবে, কিন্তু মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া যাবে না—এই প্রতিপাদ্যকে বুকে লালন করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এই প্রজন্মের চাঁদাবাজদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি। কোনো সাহায্য লাগলে সংকোচ কোরো না। আমাকে জানাতে পারো। বেশ কয়েক দিন গর্তে থাকলেও এখন উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করেছি। আশা করছি, সামনের দিনগুলোয় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা চাঁদাবাজিশিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে পারব।

ইতি,

সভাপতি, লুথাচাঁপ (লুকিয়ে থাকা চাঁদাবাজ পরিষদ)


মোহাম্মদপুরে ডাকাতি: র‌্যাবের সাবেক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জড়িত থাকার তথ্য

 

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে ব্যবসায়ীর বাসায় ডাকাতির ঘটনায় র‍্যাবের সাবেক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও জড়িত বলে তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার ওই কর্মকর্তা র‍্যাব সদর দপ্তরের একটি শাখার প্রধান ছিলেন। ২০১৯ সালে তাঁকে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অকালীন (বাধ্যতামূলক) অবসরে পাঠানো হয়।

এ ছাড়া এই ডাকাতির ঘটনায় র‍্যাব ৪–এ কর্মরত শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের (নন–কমিশন্ড) নাম এসেছে। তাঁদের বিষয়ে র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে র‍্যাব ৪–এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. রোকনুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ওই র‍্যাব সদস্যদের নাম উল্লেখ করে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠালেও তিনি উত্তর দেননি।

এর আগে গত মঙ্গলবার র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন র‍্যাব সদস্যের নাম বলেছেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।

তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে গতকাল আবার যোগাযোগ করা হলে র‌্যাবের এই মুখপাত্র এই প্রতিবেদককে ডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

১১ অক্টোবর শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তার মোড়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় ব্যবসায়ী আবু বকরের বাসায় ও কার্যালয়ে ডাকাতি হয়। সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের পোশাক পরা ডাকাতেরা নিজেদের যৌথ বাহিনী বলে পরিচয় দেন। তাঁরা ৭৫ লাখ টাকা ও ৭০ ভরি সোনা লুট করেন বলে গৃহকর্তা ও পুলিশ সূত্র জানায়।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এই মামলায় গ্রেপ্তার কামাল হোসেন নামের একজন আসামিকে গত মঙ্গলবার রাতে ডিবির কাছে হস্তান্তর করেছে র‍্যাব। ডিবি জানিয়েছে, কামাল হোসেন সাবেক সেনাসদস্য। তাঁকে গতকাল বুধবার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাঁকে ডিবির হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এর আগে গত সোমবার ছয়জনের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তাঁরাও ডিবির হেফাজতে আছেন। এই ছয়জনের মধ্যে তিনজনকে ডিবি গ্রেপ্তার করে। বাকি তিনজনকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছিল।

আলোচিত এই ডাকাতির ঘটনায় গত রোববার আটজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিল র‌্যাব। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে পরদিন ডিবির কাছে হস্তান্তর করে। বাকি পাঁচজন কোথায়, সেটা নিশ্চিত করে জানা যাচ্ছে না। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাতে ডিবির কাছে দেওয়া কামাল হোসেন ওই পাঁচজনের একজন কি না, সেটাও র‌্যাব পরিষ্কার করে বলেনি। এমনকি পাঁচজনের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ রাকিব খান গতকাল রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব একজন আসামিকে ডিবিতে হস্তান্তর করেছে। এ নিয়ে র‍্যাব ডিবির কাছে চারজন আসামি হস্তান্তর করেছে।

Tuesday, October 15, 2024

জিএম কাদেরের সভায় হাসনাত-সারজিসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

 

ফাইল ছবি

জাতীয় পার্টি নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

Loaded29.78%
Remaining Time 5:56

সোমবার (১৪ অক্টোবর) রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এক সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন। এসময় মঞ্চে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ দলটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জাপা নেতা মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম যে ঘোষণা দিয়েছে- এজন্য তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনও প্রোগ্রাম রংপুরের মাটিতে হতে দেওয়া হবে না। এ সময় দলের নেতাকর্মীরাও স্লোগান দিয়ে তাকে সমর্থন জানান।

মধ্যরাতে ভারতে পালিয়ে গেছেন ওবায়দুল কাদের!

 


জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পাঁচ দিন আগে দেশে ছেড়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি যশোর সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে ভারতে গেছেন। সেখান থেকে তাঁর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।


আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ মাঝারি পর্যায়ের অনেক নেতা গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর পালিয়ে ভারতে যান। এই নেতাদের কয়েকজন গত দু’দিনে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওবায়দুল কাদের ভারতে পৌঁছেছেন বলে তারা শুনেছেন। তবে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি। টেলিফোনেও কথা হয়নি।

সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে পাসপোর্ট-ভিসা নেই। তাই বৈধভাবে তাঁর ভারতে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ভারতে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। তাদের দাবি, গত বুধবার মধ্যরাতে অবৈধভাবে যশোর সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান ওবায়দুল কাদের

নির্বাচন দিতে যত দেরি করবেন, তত দুর্বল হবেন: বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমদ


 রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির আয়োজনে ‘গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষা: রাষ্ট্র মেরামত প্রস্তাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন হাফিজ উদ্দিন আহমদছবি: প্রথম আলো

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন দিতে যত দেরি করবে, তত দুর্বল হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ। সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ‘আপনারাও কেউ সীমা লঙ্ঘন করবেন না। জন–আকাঙ্ক্ষা অনুধাবন করার চেষ্টা করুন।’

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির আয়োজনে ‘গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষা: রাষ্ট্র মেরামত প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় হাফিজ উদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।

আলোচনায় বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘(নির্বাচন দিতে) যত দেরি করবেন আপনারা, তত দুর্বল হবেন। যত দেরি করবেন, পতিত সরকার আরও শক্তিশালী হবে। চট করে চলে আসার চিন্তাভাবনা তাদের মধ্যে আবার শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং কত সময়ের মধ্যে আপনারা নির্বাচন দেবেন, পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করুন এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার চিন্তাভাবনা আত্মস্থ করুন।’

সংবিধানের নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সংস্কারে প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাই, সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংযোজন হোক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন প্রতিটি নির্বাচন হবে—সব দলই বলেছে। এ ছাড়া এ ধরনের প্রাসঙ্গিক যেসব সংস্কার আছে বিদ্যমান সংবিধানে, সেটি সংস্কার করলেই পারে। কিন্তু নতুন করে সংবিধান লেখা মানেই তাদের আরও ১০ বছর সময় দেওয়া। এভাবে আমরা সময় দিতে রাজি নই।’

দেশের সংস্কার করবে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা—এমন মন্তব্য করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সেই সংস্কারের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কারও কারও কথায় মনে হয়েছে, তাঁরা বিরাট একটা ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন, তাঁরা সব সংস্কার করে দেবেন। কিন্তু তাঁদের কোনো ম্যান্ডেট নেই সংস্কারের। তাঁদের প্রধান কাজ একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘সীমানার মধ্যে থাকেন। আওয়ামী লীগ কীভাবে বিদায় হয়েছে? সীমা লঙ্ঘন করেছে বলে হয়েছে। সুতরাং আপনারাও কেউ সীমা লঙ্ঘন করবেন না। জন–আকাঙ্ক্ষা অনুধাবন করার চেষ্টা করুন।’

শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিরোধিতা করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতির অংশীজন হলো ছাত্ররা। তাদের মনোভাবটা বোঝার চেষ্টা করুন। যারা শেখ হাসিনার মতো সরকারকে অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছে, তাদের ওপর আস্থা রাখুন।’

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুকোমল বড়ুয়া, গণফোরামের মহাসচিব সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্তাসহ আরও অনেকে।

আগে ছিল ‘গায়েবি’ মামলা, এখন ‘ইচ্ছেমতো’ আসামি

 

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় দুটি মামলা করা হয় ২ সেপ্টেম্বর। মামলা দুটিতে আসামিদের তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন পরিচালক, একজন উপপরিচালক ও একজন সহকারী পরিচালককে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মামলাটির পেছনে রয়েছেন বিএনপির একজন নেতা ও তাঁর জামাতা। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের আসামি হওয়া কর্মকর্তারা বিএনপি নেতার জামাতার অনুমোদনহীন হিমাগারে অভিযান ও মামলা করেছিলেন। আবার পরিবেশ অধিদপ্তরের যে পরিচালককে আসামি করা হয়েছে, তিনি ওই বিএনপি নেতার আরেক জামাতা ছিলেন। তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে মামলা হচ্ছে। এর মধ্যে পূর্বশত্রুতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং চাঁদাবাজি ও হয়রানি করতে অনেককে আসামির করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। মামলায় কাদের আসামি করা হবে, তা অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএনপি বা দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

আরও পড়ুন

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’ মামলা দিত পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতারা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, হত্যা মামলায় ‘ইচ্ছেমতো’ আসামি করা হচ্ছে।

যাচাই-বাছাই না করে মিথ্যা বা ভুয়া মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি না করার অনুরোধ এসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। গত সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের মাধ্যমে যাঁরা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Sunday, October 13, 2024

আওয়ামী লীগের তৈরি আইনেই তাদের বিচার করতে হবে: জামায়াতের আমির

 

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জামায়াতের রুকন (সদস্য) সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের আমির শফিকুর রহমানছবি: সংগৃহীত

পতিত আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনে যেসব কালাকানুন ও আইন তৈরি করা হয়েছিল, সেই আইন দিয়েই তাদের (আওয়ামী লীগের) বিচার চেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গণহত্যার বিচারের বিষয়ে আরও বলেন, ‘যতদ্রুত সম্ভব ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠা করে ওদের (আওয়ামী লীগের) সঠিক পাওনা বুঝে দিতে হবে।’

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জামায়াতের রুকন (সদস্য) সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা অবিচার জুলুম কারও ওপর চাই না। তারা (আওয়ামী লীগ) দীর্ঘদিন যেসব কালাকানুন আইন তৈরি করেছিল, তাই দিয়ে তাদের বিচার হতে হবে। আমরা বারবার বলে আসছি... তারা বলত আইন সবার জন্য সমান আর বিচার বিভাগ স্বাধীন। সেই সমান আইনে সমান বেনিফিট পাওয়ার অধিকার আওয়ামী লীগের আছে।  তারা যেন তাদের সঠিক পাওনাটা পায়। পাওনা থেকে যাতে তাদের বঞ্চিত করা না হয়। যার যেটা পাওনা, সেটাই যেন পায়।