Saturday, March 23, 2024

একাত্তরে পতাকাটা তৈরির জন্য ছেলের হাতে বিয়ের ব্লাউজ তুলে দিয়েছিলেন এক মা

 

১৯৭১ সালের মার্চ। ম্যাট্রিক পরীক্ষা শেষ। রাজশাহীতে নিজের বাড়িতেই কাটছে জাফরুল ইসলামের সময়। পত্রপত্রিকায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির খবর পাচ্ছেন। ৭ মার্চ ঢাকায় ঐতিহাসিক সমাবেশ হয়েছে। সেই খবর জানতে উন্মুখ জাফরুল। রাজশাহীতে তখন এক দিন পরে পরে পত্রিকা আসত। ৯ মার্চ পত্রিকা পড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বিবরণের পাশাপাশি জানতে পারলেন ঢাকায় বাংলাদেশের পতাকা তোলার খবর। পতাকার ছবিও ছাপা হয়েছে।

২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবস পালন করে সরকার। এই দিনেই প্রতিবাদস্বরূপ কিছু একটা করা দরকার, ভাবলেন জাফরুল ইসলাম। এই ভাবনা থেকেই পতাকা উত্তোলনের কথাটা মাথায় এল। শুরু হলো পতাকা বানানোর তোড়জোড়। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি। পতাকার রং কী হবে? পত্রিকার সাদা–কালো ছবি দেখে তো বোঝার উপায় নেই পতাকার কোন অংশের কী রং। জাফরুলের চাচা শামসুল আবেদীন ঢাকায় ব্যাংকে চাকরি করতেন। ভাবলেন চাচা নিশ্চয়ই বলতে পারবেন। রাজশাহী থেকে ঢাকায় তখন সরাসরি ফোন করা যেত না। ট্রাঙ্ক কল করতে হতো। এভাবে তিনি চাচার সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। তাঁর চাচা খোঁজ নিয়ে জানালেন—সবুজ বাংলার জমিনের ওপরে লাল সূর্য, তার মাঝখানে সোনালি রঙে বাংলাদেশের মানচিত্র।


বাড়িটি এখন আর নেই
বাড়িটি এখন আর নেই

এক দিনের মধ্যেই সবুজ আর লাল কাপড় জোগাড় করে ফেললেন জাফরুল ইসলাম। কিন্তু বিপত্তি ঘটাল সোনালি কাপড়। অনেক খোঁজ করেও কোথাও পাওয়া গেল না এই রঙের কাপড়। বাড়িতে ফিরে মাকে আশাভঙ্গের কথা জানালেন। মা-ই তখন স্যুটকেস থেকে নিজের বিয়ের ব্লাউজটা বের করে দিলেন। ব্লাউজের রং ছিল সোনালি। জীবনে হয়তো একবারই পরেছিলেন। তারপর মধুর স্মৃতি হিসেবে তুলে রেখেছিলেন। বাড়িতে হাতমেশিন ছিল। রাতেই কাপড় কেটে সেলাই করে পতাকা বানালেন মা-ছেলে। বাংলাদেশের পতাকা।

রাজশাহীর কুমারপাড়া এলাকায় নিজের বাড়িতে ২৩ মার্চ সকাল সাড়ে ছয়টায় পতাকাটি উত্তোলন করলেন জাফরুল। সারা দিন উড়ল সেই পতাকা। সন্ধ্যায় আবার নামিয়ে ফেললেন। এতেই খবর পেয়ে গেল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাড়িটি পাকিস্তানি সেনাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলো। নিরাপত্তার কথা ভেবে যুদ্ধের সময় রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বালাসি গ্রামের আত্মগোপন করলেন তাঁরা। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধারা প্রবেশ করেন ১৭ ডিসেম্বর। ওই দিনই বাড়ি ফিরে আবার পতাকাটি তোলেন জাফরুল ইসলাম। তারপর অনেক দিন পর্যন্ত তোলা ছিল।

রাজশাহীর পিএন (বর্তমানে বালিকা) উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন জাফরুল ইসলাম। তাঁর মা রুবী ইসলামও একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশে–বিদেশে কে কোথায় আছেন, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ছবি দিয়ে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষকে জাদুঘরের মতো করে সাজিয়েছেন। সেখানে তাঁর মায়ের ছবিও আছে। আর আছে মায়ের ব্লাউজ কেটে পতাকা তৈরির সেই কাহিনি।

২০১৫ সালে প্রায় ৭৭ বছর বয়সে মারা যান রুবী ইসলাম। জাফরুল ইসলাম যুক্তরাজ্যের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাডাম স্মিথ ইন্টারন্যাশনাল ইউকে’র পলিসি অ্যাডভাইজার হয়েছিলেন। বর্তমানে ঢাকায় অবসরজীবন কাটাচ্ছেন। সড়ক সম্প্রসারণের কারণে তাঁদের সেই বাড়িটিও ভাঙা পড়েছে।

আর সেই পতাকা? জাফরুল ইসলাম জানালেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার জন্য যখন যুদ্ধ সময়ের বিভিন্ন স্মারক সংগ্রহ করা হচ্ছিল, তখন তিনি এটি সেখানে জমা দিয়েছিলেন। জাফরুল ইসলাম বলেন, ‘সেই পতাকার ঘ্রাণ নিলে আজও আমার জননীকে খুঁজে পাই। তাই মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালায় যাই। পতাকাটির দিকে তাকিয়ে থাকি, অজান্তেই চোখ ভিজে যায়।’

সাত কোটি বছর আগের ডাইনোসরের জীবাশ্ম

 


 

যত বেশি অত্যাধুনিক গবেষণা হয়, তত বেশি প্রাণীর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়। এর মধ্যে কিছু প্রাণী বহু আগে পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াত। একসময় এই গ্রহে নানা প্রজাতির ডাইনোসরের অস্তিত্বের আবিষ্কার কার্যত বিজ্ঞানকেই এগিয়ে নিচ্ছে।

এবার ৭ কোটি ২০ লাখ বছর আগের তৃণভোজী ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি সন্ধান পাওয়া হাঁসের মুখের মতো চ্যাপ্টা মসৃণ চোয়ালের এই ডাইনোসরের বসবাস ছিল চিলিতে।

সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী সম্প্রতি আবিষ্কৃত তৃণভোজী এই ডাইনোসর গোনকোকেন ন্যানোই হিসেবে পরিচিত। এগুলো লম্বায় চার মিটার আর ওজনে এক টন পর্যন্ত হতো।

প্রায় ১০ বছর ধরে চলা গবেষণার পর এই আবিষ্কারের কথা জানালেন বিজ্ঞানীরা। চিলির অ্যান্টার্কটিক ইনস্টিটিউট (আইএনএসিএইচ) পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রমের সময় ২০১৩ সালে পাতাগোনিয়ায় তোরেস দেল পাইন ন্যাশনাল পার্কের কাছে হলুদাভ কিছু হাড়ের ভগ্নাংশ পাওয়া যায়।

এ গবেষণাপত্রের মূল লেখক জনাথন আলার্কন বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম, দক্ষিণ আমেরিকায় পাওয়া যেত এমন একই প্রজাতিরই তৃণভোজী ডাইনোসর হবে হয়তো। কিন্তু যতই গবেষণা এগোতে থাকল, আমরা বুঝতে পারলাম, এটা একেবারেই নতুন কিছু।’

জনাথন দাবি করেন, শতাধিক হাড় অত্যন্ত যত্নসহকারে উদ্ধার করেন গবেষকেরা। কোনো হাড় যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে তাঁরা খুবই সতর্ক ছিলেন।

পরের কাজটি ছিল জীবাশ্মবিদদের। উদ্ধার হওয়ার হাড়গুলো নতুন প্রজাতির, নাকি আগে সন্ধান পাওয়া একই প্রজাতির ডাইনোসরের, তা নিশ্চিত করা। আগের গবেষণাগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা।

গবেষণাপত্রের আরেক লেখক আলেক্সান্ডার ভারগাস বলেন, ‘গোনকোকেন ন্যানোই হাঁসের মুখের মতো চ্যাপ্টা মসৃণ চোয়ালের অগ্রসর প্রজাতির ডাইনোসর নয়। বরং পুরোনো প্রজাতির যা বংশপরম্পরায় বিবর্তনের মাধ্যমে অগ্রসর প্রজাতিতে পরিণত হয়।’


 

কে ছিল কুমিরের পূর্বপুরুষ?

 

 
 


ডাইনোসররা প্রগৌতিহাসিক পৃথিবী শাসনের সব গৌরব পায়। বিজ্ঞানীরা আধুনিক কুমিরের এক চাচাতো ভাই হিসেবে এটোসররা ডাইনোসরদের খোঁজ পেয়েছেন। এই ডাইনোসররা সেই সময়ে বিশ্ব শাসনের দলে নাম লিখিয়েছিল। ট্রায়াসিক যুগের দানব প্রায় ২০ কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। অ্যান্টার্কটিকা ও অস্ট্রেলিয়া  প্রতিটি মহাদেশেই এদের জীবাশ্ম পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জীবাশ্মের হাড়ের তথ্য ব্যবহার করেন বিভিন্ন প্রজাতিকে শনাক্ত করতে চেষ্টা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, অস্টিনের গবেষকেরা এটোসরদের বর্মের অক্ষত অংশ খুঁজে পেয়েছেন। প্রাগৌতিহাসিক আমলের কুমিরের বর্মকে ক্যারাপেস বলা হয়। এই বর্মে শরীরের ৭০ শতাংশ সম্পূর্ণ ঢেকে থাকে।

কুমিরের চাচাতো ভাইদের নিয়ে একটি গবেষণাপত্র দ্য অ্যানাটমিক্যাল রেকর্ডে প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানী উইলিয়াম রেয়েস বলেছেন, আদি কুমিরের ঘাড়ের পেছনে কাঁধের অঞ্চল থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত উপাদানের খোঁজ মিলেছে। নতুন এই প্রজাতির নাম দেওয়া হয়েছে গারজাপেল্টা মুয়েলেরি। গারজা নামটি এসেছে উত্তর-পশ্চিম টেক্সাসের গারজা কাউন্টি থেকে, যেখানে আইটোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল। প্রজাতির নাম মুয়েলেরি নাম রাখা হয়েছে বিল মুলার নামের জীবাশ্মবিদের সম্মানে।

নমুনা পরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানী উইলিয়াম রেয়েস
নমুনা পরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানী উইলিয়াম রেয়েস
ছবি: উইলিয়াম রেয়েসের সৌজন্যে

কুমিরের পূর্বপুরুষ হিসেবে নিউ মেক্সিকো মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি অ্যান্ড সায়েন্সে গারজাপেল্টার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বিজ্ঞানী রেয়েস বলেন, গারজাপেল্টা প্রায় সাড়ে ২১ কোটি বছর আগে বেঁচে ছিল। আধুনিক আমেরিকান কুমিরের মতো প্রকান্ড আকারের ছিল তাদের দেহ। দেখতে কাটাওয়ালা বিশালাকৃতির ছিল।

গার্জাপেল্টা ও অন্যান্য অ্যাটোসরদের কাটাওয়ালা আবৃত হাড়ের প্লেটকে

অস্টিওডার্ম বলা হয়। এগুলো সরাসরি ত্বকের সঙ্গে যুক্ত ছিল। অনেকটা মোজাইকের মতো একসঙ্গে লেগে বর্ম তৈরি করেছিল। হাড়ের প্লেট শরীর ঢেকে রাখার পাশাপাশি দুই পাশ আবদ্ধ ছিল, যা শিকারিদের থেকে সুরক্ষা দিত। এখনকার কুমির মাংসাশী হলেও পূর্বপুরুষেরা প্রাথমিকভাবে সর্বভুক ছিল। কুমিরের পূর্বপুরুষের এই জীবাশ্ম ৩০ বছরের বেশির ভাগ সময় বদ্ধঘরে সংরক্ষিত ছিল।


Wednesday, March 20, 2024

উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জামানত লাখ টাকা, তফসিল আজ


 

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হতে পারে। গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।

এবার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জামানতের পরিমাণ ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ভোটারের সমর্থনসূচক সইসহ তালিকা জমা দেওয়ার বিধানও বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনের সংশোধনী প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করেছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়েছিল, এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ হবে ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ২৫ মে। ভোটের তারিখ জানানো হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। আজ সকালে এ বিষয়ে বৈঠক ডেকেছে ইসি।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সভা রয়েছে। ভোটের তারিখ আগেই জানানো হয়েছে। প্রথম ধাপের পূর্ণাঙ্গ তফসিল এ দিন ঘোষণা করা হতে পারে।

ইসি সূত্র জানায়, আজ ইসির বৈঠক থেকে জাতীয় সংসদের ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করা হতে পারে। এ ছাড়া ইসির বৈঠকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করার কথা রয়েছে।

জামানত রক্ষায় ভোট পেতে হবে ১৫ শতাংশ

চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানতের পরিমাণ যে বাড়ানো হয়েছে, এর বাইরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণবিধিমালায় আরও কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে এসব সংশোধনী প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করেছে ইসি। গত মঙ্গলবার এটি প্রকাশ করা হয়। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে এসব বিধান কার্যকর হবে।

সংশোধিত বিধি অনুযায়ী, প্রার্থীদের জামানত রক্ষায় প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট পেতে হবে। এত দিন তা ছিল ৮ শতাংশ। এ ছাড়া এবার থেকে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে অনলাইনে। প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীরা জনসংযোগ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাতে পারবেন। প্রার্থীরা সাদাকালোর পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ও ব্যানার করতে পারবেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ভোটারের স্বাক্ষর অনেক সময় জাল করা হয়। তাই কমিশন এটি তুলে দিতে চেয়েছে।

আগামী মে মাসে ৪ ধাপে ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবে ইসি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা এবার স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেবে না। অন্যদিকে সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে এবারের উপজেলা নির্বাচন হবে মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে


সু চির বাড়ি নিলামে উঠল, কিনতে এল না কেউ


 

কারাগারে থাকা মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির বাড়ি আজ বুধবার নিলামে তোলা হয়েছিল। কিন্তু বাড়িটি কেনার ব্যাপারে কেউ আগ্রহ দেখাননি।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, নিলামে সু চির বাড়ির প্রারম্ভিক দাম ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ডলার। কিন্তু কেউ নিলামের প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি।

ইয়াঙ্গুনের ইনয়ে হ্রদের পাশে সু চির পারিবারিক এ বাড়িটি প্রায় ১ দশমিক ৯২ একর জমির ওপর।

বাড়িটির মালিকানা নিয়ে বড় ভাই অং সান ও–এর সঙ্গে সু চির বিরোধ ছিল। চলছিল আইনি লড়াই।

বহু বছরের আইনি লড়াইয়ের পর মিয়ানমারের সুপ্রিম কোর্ট বাড়িটি নিলামে তোলার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা মেনে আজ সু চির পারিবারিক বাড়ি নিলামে ওঠে।


২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান নোবেলজয়ী সু চি। এর পর থেকে কারাগারে আছেন তিনি। সু চির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। কয়েকটি মামলায় সাজাও পেয়েছেন।

নিলামের প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বিষয়টির স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, আজকের নিলামে কেউ বাড়িটি কিনতে আসেননি। তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চলে গেছেন।

বিবিসি বার্মিজের পক্ষ থেকেও এ খবর জানানো হয়েছে।

নিলামে বাড়িটি বিক্রি না হওয়ার প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে অং সান ও-এর প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু সাড়া মিলেনি।

সু চির বাবা জেনারেল অং সান ছিলেন মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক। ১৯৪৭ সালে তাঁকে হত্যা করা হয়। এরপর সু চির মা খিন খিয়ি-এর তত্ত্বাবধানে ছিল বাড়িটি।


পারিবারিক বাড়ির ভাগ চেয়ে ২০০০ সালে মামলা করেন অং সান ও। ২০২৬ সালে ওই মামলার রায় হয়। আদালত পুরো সম্পত্তি ভাই-বোনদের মধ্যে সমানভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেন।

আদালতে এমন নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন অং সান ও। অভ্যুত্থানের পর সর্বোচ্চ আদালত তাঁর বিশেষ আপিলের পক্ষে রায় দেন। বাড়িটি নিলামে বিক্রি করতে বলেন। কিন্তু সেই উদ্যোগ সফল হলো না।


জিম্মি জাহাজ থেকে মালিকপক্ষকে ফোন দিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা

‘গোল্ডেন হক’ নামের জাহাজটি বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। ২৩ নাবিক, ক্রুসহ জাহাজটি জিম্মি করেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরাছবি: সংগৃহীত

২৩ জন নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। জলদস্যুরা আজ বুধবার যোগাযোগ করে বলে জাহাজের মালিকপক্ষ প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।

জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জলদস্যুরা যোগাযোগ (ফোন) শুরু করেছে। এখন আলোচনার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, যোগাযোগ শুরু হওয়ায় এখন জলদস্যুরা মুক্তিপণ দাবি করতে পারে। দর-কষাকষি করে সমঝোতায় পৌঁছালে জাহাজসহ নাবিকদের মুক্তি মিলতে পারে।

অবশ্য জলদস্যুদের যোগাযোগের আগেই মালিকপক্ষ সমঝোতার নানা প্রক্রিয়ার কাজ গুছিয়ে এনেছিল বলে সূত্র জানায়।

১২ মার্চ সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে জলদস্যুরা।

তিন দিনের মাথায় নাবিকসহ জিম্মি জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই দফা স্থান পরিবর্তন করে জাহাজটি গত শুক্রবার সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করে রাখে জলদস্যুরা।


 

Monday, March 18, 2024

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজে অভিযানের প্রস্তুতি নিয়ে যা বলল মালিকপক্ষ

 

 

 


 

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর এই ছবি প্রকাশ করেছে ভারতীয় নৌবাহিনীছবি: ভারতীয় নৌবাহিনীর এক্স পোস্ট থেকে নেওয়া

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধার করতে দেশটির পুলিশ ও বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সোমালিয়ার আধা স্বায়ত্তশাসিত পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স আজ সোমবার এ খবর প্রকাশ করেছে। তবে জাহাজটির মালিকপক্ষ বলেছে, এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না। নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা।

১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশি জাহাজটি ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করা আছে। জাহাজটিতে জলদস্যুরা ওঠার পরপরই একটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি দূরপাল্লার টহল জাহাজ মোতায়েন করেছিল ভারতীয় নৌবাহিনী। বাংলাদেশি জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নেওয়া পর্যন্ত সেটির কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অনুসরণ করেছিল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। এর মধ্যে শনিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে মাল্টার পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধার করেন।


এর দুই দিনের মাথায় আজ পান্টল্যান্ড পুলিশ জানায়, এমভি আবদুল্লাহকে দখল করে রাখা জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক নৌ সেনারা জলদস্যুদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন বলে খবর পাওয়ার পর পান্টল্যান্ড পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে কিছু বলেনি ভারতীয় নৌবাহিনী।

তবে জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে আগেও সরকার থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নৌবাহিনীর কাছে সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে।’


এর আগে ১৪ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ সরকার তাতে সম্মতি দেয়নি বলে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খুরশেদ আলম একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আলোচনায় জানান। সেখানে তিনি বলেন, নাবিকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই প্রস্তাবে সরকার ও মালিকপক্ষ রাজি হয়নি।



যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী

 

Sunday, March 17, 2024

পুরুষ ও নারীর শার্টে বোতাম কেন ভিন্ন পাশে থাকে

 পুরুষের শার্টে বোতাম থাকে ডানে, নারীর শার্টে বাঁয়ে। এই ধারা প্রাচীনকালের। কিন্তু ঠিক কী কারণে নারী–পুরুষের শার্টের বোতামের অবস্থান আলাদা? কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন ফ্যাশন ইতিহাসবিদেরা


পুরুষের শার্টে বোতাম থাকে ডানে, নারীর শার্টে বাঁয়ে, এই ধারা প্রাচীনকালেরমডেল: নিরব ও নীলা:

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, বোতামের উদ্ভব ১৩ শতকে। ১৪ শতক থেকে বোতাম হয়ে ওঠে সামাজিক অবস্থানের পরিচয়বাহক অলংকার। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যভিত্তিক পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আওয়ার ভিশনের অন্যতম ডিজাইনার নাটালি হিকস বলেন, শুরুর দিকে সাজ ও নকশার উপাদান হিসেবে বোতাম শুধু সম্পদশালী নারীরাই ব্যবহার করতেন।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, বোতামের উদ্ভব ১৩ শতকে
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, বোতামের উদ্ভব ১৩ শতকে
ছবি: পেক্সেলস

তবে ঠিক কী কারণে নারী ও পুরুষদের শার্টের ভিন্ন দুই পাশে বোতাম বসানো হলো, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড টেপার্ড মেন্সওয়্যারের সিইও স্কট লিবেনবার্গ একটি তত্ত্ব দাঁড় করেছেন। সেই তত্ত্বে তিনি বলেন, ‘আগেকার দিনে ধনীদের জন্য পরিধেয় পোশাক ছিল একটা বড় বিষয়। ধনী নারীদের পোশাক পরিয়ে দেওয়ার জন্য একজন সহকারী থাকত। তাই নারীদের পোশাকের বোতাম বাঁ পাশে বসানো থাকলে ডানহাতি সহকারীর জন্য তা পরিয়ে দেওয়া বেশ সুবিধাজনক হতো। অন্যদিকে পুরুষেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজেরাই নিজেদের পোশাক পরতেন। তাই সুবিধা বিবেচনায় পুরুষদের শার্টে বোতাম লাগানো হতো ডান পাশে।’

ডিজাইনার নাটালি হিকসও লিবেনবার্গের এই তত্ত্ব সমর্থন করেছেন।

এই ধারা বদলায়নি কেন

এর উত্তরে হিকস বলেন, ‘১৯ শতকে এসে সেলাই–প্রযুক্তির অগ্রগতি হলে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের পোশাকেও বোতামের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে। সেই পুরোনো দিন থেকে যা প্রচলিত ছিল, তা কেউ আর সংশোধন করার প্রয়োজন বোধ করেনি। বরং এই ভিন্নতাকে অবলম্বন করে নতুন নতুন ফ্যাশন চালু হয়েছে।’

১৯ শতকে এসে সেলাই–প্রযুক্তির অগ্রগতি হলে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের পোশাকেও বোতামের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে
১৯ শতকে এসে সেলাই–প্রযুক্তির অগ্রগতি হলে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের পোশাকেও বোতামের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে
ছবি: পেক্সেলস

হিকসের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন লিবেনবার্গও। তিনি বলেন, ‘এই ধারা কেন বদলায়নি, তার সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখা এর একটি কারণ হতে পারে। একবার একটি স্টাইল চালু হয়ে গেলে তা দিনের পর দিন ধরে চলতেই থাকে। কালক্রমে স্টাইল বিকশিত হলেও সাধারণ কিছু বিষয় একই রকম থেকে যায়।’

পোশাক কারখানার সুবিধাকেও একটি কারণ হিসেবে মানেন লিবেনবার্গ। তিনি বলেন, ‘দুটি ভিন্ন পাশে বোতাম বসানো পোশাক অ্যাসেমব্লি লাইনে এলে বোঝা সহজ হয় কোনটি পুরুষদের জন্য আর কোনটি নারীদের জন্য তৈরি। এতে কারখানায় কাজটা সহজ হয়ে যায়।’

পুরোনো দিন থেকে যা প্রচলিত ছিল, তা কেউ আর সংশোধন করার প্রয়োজন বোধ করেনি
পুরোনো দিন থেকে যা প্রচলিত ছিল, তা কেউ আর সংশোধন করার প্রয়োজন বোধ করেনি
ছবি: পেক্সেলস

হিকস বলেন, বেশির ভাগ লোকই কিন্তু জানে না যে লিঙ্গভেদে বোতাম দুই পাশে বসানো হয়। অর্থাৎ অনেকেই একে স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়।